জীবনটা কেমন যেন
This is a Bangla Biography of me (Mohsin Kayser). Life is full of incidents and happening. I tried to share my life to get the lesson for those who want to learn from real life.
Thursday 1 December 2022
আইসক্রীম
Monday 14 November 2022
একটি স্বপ্নঃ খাবার দোকান
রিযিকের জন্য মানুষ কত কিছুই না করে, কেউ স্বপ্ন নিয়ে করে আবার কেউ করার জন্য করে; অনেকে বাঁচার জন্য করে। তেমনি আমিও কিছু করতে চাই। প্রথমেই কি করতে চাই সেটা খোলাসা করা দরকার।এমন একটি কিছু করতে চাই যেটাতে অর্থও যেমন আসবে তেমনি মনেরও পরিতৃপ্তি আসবে আর সেই সাথে যাদের জন্য করব তারাও সমাদর করবে। সেই ভাবনা থেকেই মনে আসল যে আমি একটা খাবার দোকান দিতে চাই। একটু ভিন্ন রকম কিন্তু জনপ্রিয় হতে বাধ্য।
প্রায়শই দেখি মানুষ কিছু এষ্টাবলিশ করে কিন্তু কিছুদিন পর দম ফুরিয়ে ফেলে। এর প্রধান কারন মানুষ যাচাই বাছাই না করেই তাদের ব্যবসা চালু করে ফেলে। দ্বিতীয়ত, যে তার ব্যবসার ধরণ সম্পর্কে ভাল না জেনেই ব্যবসা শুরু করে, তো শুরুতেই আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন ধরনের ব্যবসা ভাল জানেন এবং এর সাথে আপনার প্রডাক্ট, প্রাইস, প্রমোশন ও প্লেস ঠিক আছে কিনা। যদি এমন হয় এগুলোর শুধুমাত্র একটা আপনার সাথে যায় না সেক্ষেত্রে আপনার সেই ব্যবসা করার আগে দিত্বীয়বার ভাবতে হবে।
গেল কিছুদিন আগে খোজ নিতে গেলাম উত্তরা ১১ নং সেক্টরের ১১ নং রোডের একটি দোকানের ব্যাপারে কথা বলতে। জায়গার মালিক সব শুনে বললেন উনি খাবারের ব্যবসার জন্য দোকান দিবেন না।
Friday 31 July 2020
Siren Head Forest by Afuyan Kayser Sami (Siren Head Forest - লিখেছেন আফুয়ান কায়সার সামী)
Sunday 10 May 2020
Australia and Shahbuddin Bhai at Marrickville Musalla
Love for him
Thursday 1 February 2018
আমি ধীরে ধীরে বাবা হয়ে যাচ্ছি
Wednesday 6 December 2017
কথার শক্তি : Nothing more powerfull than word
অনেক ভেবে চিন্তে দেখলাম পৃথিবীতে কথার চাইতে শক্তিশালী কিছু নাই। অস্ত্রের ক্ষমতা খুবই সীমিত পক্ষান্তরে, কথার ক্ষমতা অসীম, এর ক্ষমতা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সময়ের মাপকাঠিতে মাপা যায় না। কথা একবার মুখ থেকে বের হলে আর ফেরত নেয়া যায় না। অনেক সময় দেখা যায়, কথার ফলশ্রুতিতে বড় বড় যুদ্ধ, দাঙ্গা, হাঙ্গামা বেধে যায়। সমাজ জীবনে এর প্রভাব প্রকট। খোলামেলা ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় কথার মাধ্যমে কারও জীবন বাঁচানো যায় এবং অন্যদিকে কথার মাধ্যমে কারও জীবন ধ্বংশ করা যায়। ধরা যাক, আপনি কারও সাথে আলাপচারিতায় ব্যস্ত এবং কথা প্রসংগে কোন ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার কাছে বলা হল উনি খুব খারাপ প্রকৃতির লোক এবং কিছুক্ষণের মধ্যে উনি আমাদের মধ্যে উপস্থিত হবেন। এখন আপনি উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কি ভাববেন যখন আপনি উনার সাথে সাক্ষাত করবেন। হ্যা, আপনি তাকে খারাপ লোক বলেই অভিহিত করবেন এবং এটাই স্বাভাবিক। যদি আপনি খুবই উন্নত যুক্তি ও মূল্যবোধের লোক হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই তথ্যের সত্যতা যাচাই করে তাকে ভাল বা মন্দ বলবেন, তাই না? তথাপিও আপনি তাকে নেতিবাচক ভঙ্গিতেই বিচার করবেন। এটাই মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। একইভাবে খুব নিচু এবং খারাপ প্রকৃতির লোককেও যদি ভাল বলে কেউ আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেয় তাহলে তাকে প্রথমেই ভাল বিবেচনা করে তার চরিত্র অংকন করবেন। এমন লোক খুজে পাওয়া দুঃষ্কর যিনি নিরপেক্ষ থাকবেন।
সামাজিক জীবনে আমরা প্রায়ই বলে থাকি অমুক কমিশনার চোর, অমুক মেম্বার চোরের সর্দার, অমুকে হারমর্দ লোক কিন্তু আমরা কখনও ভাবি না এটা যে, যার নামে কুৎসা রটনা করা হল সে আসলেই খারাপ লোক কিনা ? নিদেনপক্ষে নূন্যতম সাক্ষ্যও আমরা যোগাড় করতে পারব কিনা। সবচেয়ে বড় বিচারক আল্লাহ্পাক যিনি সবকিছু দেখেন, জানেন ও শুনেন। তার বিচারে কোন ভূল নাই।
এত গেল এক প্রকার, আসুন কথা সম্পর্কে আমরা আমাদের জ্ঞানের ভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধশালী করে তুলি। সত্যের মৃত্যু নাই, এটা আমরা সবাই জানি কিন্তু কয়জন মানি? তাই তো সমাজে দেখা যায় মিথ্যার জয়জয়কার। কথা প্রসংগে এক মুরব্বীর সাথে বললাম কারও উপর জুলুম অত্যাচার করে কিছু চাপিয়ে দেয়ার কোনই মানে নেই এতে সম্মান তো বৃদ্ধি পায়ই না ববং মানুষের কাছে নিন্দনীয় বলে বিবেচিত হয়। উনার উত্তর হল ক্ষমতা আছে সেটা দেখিয়ে দিলাম। পরবর্তীতে ভেবে দেখলামপৃথিবীটা এভাবেই চলছে। যেন ক্ষমতার জয় জয়কার কিন্তু গত পরশু যখন রহমান টেইলার্স এর মালিক রহমান ভায়ের বাবাকে কবর দিয়ে আসলাম; ফিরতে ফিরতে ভাবলাম কদিন পরই তো আমাকে অন্যের কাধে চড়ে আসতে হবে।
কেউ আপনাকে খারাপ বললেই কিন্তু তাকে খারাপ ভাবা ঠিক হবে না। আপনাকে ভাবতে হবে আসলেই তার অভিযোগ কতটুকু সত্যি এবং যে বলছে তার মোটিভ কি? এমন তো হতে পারে আপনি এটা নিজ দোষেই অর্জন করেছেন।
Wednesday 8 November 2017
স্বপ্নের দেশ অস্ট্রেলিয়া - Dream country to reside; Australia
(আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহের এক অধ্যায়ের কিছু স্মৃতি উল্লেখ করার প্রয়াসে আমার এই ব্লগ লেখা, সত্য প্রকাশে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে নিজ গুণে ক্ষমা করবেন। )
বিদেশে যাপিত জীবন-
২০০৩ সালে জুলাই মাসের ৩১ তারিখে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে উঠলাম অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে, পৌছলাম পরদিন ১ আগষ্ট পৌছলাম সিডনীতে। কাষ্টমস ইমিগ্রেশন ঝামেলা শেষ করে প্রবেশ করলাম স্বপ্নের দেশ অষ্টেলিয়া। দেখলাম একবুক খুশি ও গর্ব নিয়ে বড়ভাই দাড়িয়ে আছে আমাকে রিসিভ করার জন্য। আজ জীবনের এই বাঁকে এসে যখন মন খারাপ হয় তখন আমি বড় ভায়ের সেই মুখখানা কল্পনা করি আর সাথে সাথে খুঁজে পাই স্বজনের প্রতি স্বজনের মমত্ববোধ আর আনন্দের ছোঁয়া। গাড়িতে উঠলাম সরাসরি বাসায় না গিয়ে সিডনী শহর দেখাতে নিয়ে গেলেন। বাসায় ফিরলাম পরিচয় হল মুসা ভাই, সোহেল ভাই, নূরু ভাই, দুলাল ভাই এর সাথে। পরদিন পরিচয় হল কুমিল্লার ভূইয়া ভায়ের সাথে। আমার তখন একটা নেশা ছিল ইন্টারনেট ব্রাউজ করা। দেশে থাকতে ২0 টাকা ঘন্টা করে ইন্দিরা রোডের মাহবুবা প্লাজায় গিয়ে ব্রাউজ করতাম। নিউটাউন সাবার্বে একটা নেট এর দোকান পেলাম এবং মাঝে মাঝে ঐখানে গিয়ে নেট ব্রাউজ করতাম, ভালই লাগত। পরদিন কলেজ খুঁজে বের করলাম। এলিকস কোর্স শুরু করলাম গ্লোবাল কলেজে। অনেক ষ্টুডেন্ট এর মাঝে উন্নত পরিবেশে ভালই কাটছিল দিনগুলো যদিও কিছুদিন পরই চিন্তায় পড়ে গেলাম কাজ কর্ম কিভাবে পাব এটা নিয়ে। সপ্তাহ দুয়েক পরে দেখলাম অনেকেই কাজ জুটিয়ে নিয়েছে। কয়েকদিন পর শুরু হল নুরু ভায়ের সাথে ভোরে উঠে ক্লিনিং কাজ করা। যদিও এটাতে তেমন কোন কিছু শেখার নেই কিন্তু মাসখানেক হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর বেতন বলতে তেমন কিছু পেলাম না।
বন্ধুরা যত
কলিগ
বিশেষ করে গতকাল ২৯-০১-২০২০ তে মনে পড়ল ক্রিস এর কথা, কলোনারী এজ এর কথা বলতে গেলে অবশ্যই যাদের কথা বলতে হয় তাদের মধ্যে ক্রিস অন্যতম। গতকাল আমার ছেলে আফুয়ান বলছিল, “বাবা তুমি কি সব গান জান নাকি নিজে নিজেই বানাও”। ক্রিস ছিল এমন একজন যে সব গান জানত, যে কোন শব্দ বললেই সেটা দিয়ে গান গাইতে পারত। প্রচুর পরিশ্রম করত এবং সর্বদাই ডেকসেট এ গান শুনত। ২০০৩-০৪ সালেও টেপ ক্যাসেট পাওয়া যেত অষ্ট্রেলিয়াতে। সারাক্ষণই আমুদে স্বভাবের ক্রিসকে একদিন দেখলাম মন খুব খারাপ। নিমিষেই কলোনারী এক এর সবাই কাজ থামিয়ে দিল এবং জানতে পারলাম ওর ব্রেক আপ হয়েছে। বিশেষ করে ও তার বান্ধবীকে খুবই ভালবাসত, প্রায়ই কাজের ফাকে বান্ধবীর ছবি দেখাত। মেয়েটার সাথে থাকাকালীন সমস্ত খরচ ওই বহন করত। কিন্তু মেয়েটা বিট্রে করল শেষ পর্যন্ত। কে বলে যে বিদেশীদের ভালবাসা নেই? আসলে ভালবাসাটাকে আমরা আমাদের নিজেদের সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করতে ভালবাসি। সবাই কাজ থামিয়ে একে একে সমবেদনা জানালাম। আমিও এমন সমবেদনা পেলাম যেদিন জানতে পারলাম আমার সেঝুভাই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেল, সেদিনও সবাই আমাকে সমবেদনা জানিয়েছিল। এই একটা ব্যাপার ওদের মধ্যে আছে, কেউ কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে বা কারও কোন ক্ষতি হলে সবাই সমবেদনা জানায়। আমরা এটুকুও করতে জানি না।
আমার অস্ট্রেলিয়ার গল্প পূর্ণই হবে না যদি না আমি মাসালা হাউজের কথা বর্ণনা করি। শুরুতেই কিছুটা ভূমিকার প্রয়োজন বোধ করছি। পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বাংলার মাটি ছেড়ে রওয়ানা হলাম অস্ট্রেলিয়াতে এবং এখানে কাটালাম জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ৬টি বছর। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের জন্য বিভিন্ন জায়জায় গিয়েছে ও কাজ করেছি। তন্মেদ্ধে মাসালা হাউজ, কলোনারী এজ, চার্লিস কিচেন, এম সি এ, ওপেরা হাউজ রেস্টোরেন্ট, স্পিট জংশন এর রেস্টোরেন্ট অন্যতম। প্রথমেই মাসালা হাউজের প্রতিষ্ঠাতা জনাব আলমগীর মোড়ল, বাংলাদেশে বাড়ি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার উত্তর শিমুলিয়া গ্রাম। যাই হোক যতদূর জানা যায় সর্বপ্রথম মাসালা হাউজ প্রতিষ্ঠিত হয় এনমোর (Enmore- Close to Enmore Theatre, Sydney, Australia) এ ২০০০ খ্রীষ্টাবের কিছু আগে বা পরে। বেশ কিছুদিন ব্যবসা করার পর তিনি তারই এক ঘনিষ্ঠজন কুমিল্লার ভূইয়া সাহেবের কাছে বিক্রি করে দেন এবং পরবর্তীতে অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত বনডাই বিচ সংলগ্ন হল স্ট্রিট ও ওব্রায়ান স্ট্রিট এ কর্ণারে নতুন করে শুরু করেন মাসালা হাউজ ফাইন ডাইনিং রেস্টোরেন্ট। সময়টা ছিল ২০০৩ সাল যখন আমি নূরু ভায়ের সাথে প্রতিদিন সকাল ৪:৩০ মিনিটে উঠে ক্লিনিং কাজে যেতাম। সেই ভোর থেকে বেলা ৮টা বা ৯টা পর্যন্ত সপ্তাহে কাজ করতাম এবং এক মাস পরে বেতন হিসাবে পেলাম মাত্র ৮০ ডলার যা বাংলা টাকায় ছিল প্রায় ৩,৫০০ টাকার মত, এটা অমানবিক। যেকানে গড় পড়তা ক্যাশ ইন হ্যান্ড কাজেই ঘন্টায় পাওয়া যেত ৭/৮ ডলার সেখানে আমি পেলাম .৮ ডলার। ঠিক তখনই আলমগীর ভায়ের রেস্টোরেন্ট এর লোক দরকার হল আমিও চাইছিলাম কাক ডাকা ভোরে উঠার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে।মাসালা হাউজ
হেড শেফ আলমগীর ভাই, তান্দুরী শেফ সোহেল ভাই যিনি আলমগীর ভায়ের শ্যালক আর আমি কিচেনহ্যান্ড কাম মিডলম্যান। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১/১২ টা পর্যন্ত কাজ এবং কাজ শেষে আলমগীর ভায়ের গাড়ীতে করে বাসায় ফেরা। তবে বেশির ভাগ সময় বড় ভাই কাজ শেষ হওয়ার আগেই চলে আসতেন। মনে পড়ে ওল্ড সাউথ হেড হয়ে বন্ডাই জংশন হয়ে মোর পার্ক হয়ে রেডফার্ন, নিউটাউন, ম্যারিকভিল হয়ে ডালউয়িচ হিলে বাসায় ফেরা। কত শত হাসি কষ্টের কথা বলতে বলতে বাসায় ফেরা আর সেটাও একটা ইতিহাস হয়ে গেছে। জাহাঙ্গীর নামের এক ভদ্রলোক ছিলেন ওয়েটার এর সাথে এক আপু এবং মার্ক নামের জার্মানীর একটা ছেলে। তুলনামুলক ভাবে এখানে বেতন ভাল ছিল প্রতিদিন ৫০ ডলার আমার জীবনের প্রথম ইনকাম এটাকেই বলা চলে। তখন বেতন পেলে বা কিছু কিনতে গেলে আগে হিসাব করতাম বাংলা টাকায় কত হয়। যাই হোক কাজ করছি, বাসনকোসন ধুচিছ, মিডলম্যান এর কাজ করছি কিন্তু হঠাৎ করেই মার্ক জার্মানীতে চলে গেল। ফ্রন্টে এবার কাজের লোক লাগবে। আমাকে বলা হল সামনে কাজ করতে, আমি তো মহাখুশি কিচেনে গরমে কাজ করার চাইতে সামনে সাদা শার্ট কালো প্যান্ট পরে বিদেশী কাষ্টমার দের খিদমত করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে বারবার বাহবা দিচ্ছিলাম, কিন্তু হায় কাজ করতে গিয়ে অনুভব করলাম সামনে ওয়েটারের কাজ করা কতটা যে কষ্টকর। এমন একটা সময় হল যে সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলতাম। এক টেবিলের অর্ডার আরেক টেবিলে দিয়ে আসতাম, কিযে মানসিক চাপ। তখন বুঝতে পারলাম সামনে সুটেড বুটেড হয়ে থাকার চাইতে পেছনে পিয়াজ কাটাও অনেক শান্তির।
যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে কোথায় কাজ করতে পারলে ভাল লাগবে?? আমি অকপটে বলব ‘কলোনারী এজ’। এটা সিডনী শহরের ম্যারিকভিলা সাবার্বের অন্তর্গত লিলিয়ান ফাউলার স্ট্রিট এ অবস্থিত ছিল কিন্তু বর্তমানে এটা ক্যারিংটন স্ট্রিটে স্থানান্তরিত হয়েছে। এক্সিকিউটিভ শেফ সাইমন ফক্স (একটু মাথা কেমন যেন, ) নামকরা ব্রিটিশ শেফ। অসম্ভব সুন্দর পার্টি অর্গানাইজ করতে পারত। বিশেষ করে ফুড সেকশন টা উনার ছিল নখদর্পনে। একটা মজার বিষয় হল ব্রিটিশটা কোন শব্দ পুরোটা উচ্চারণ করে না, অর্ধেকটা পেটের ভিতর রেখে দেয়। উনিসহ সবাই আমাকে ডাকত গাইজা, যদিও আমি সবাইকে বার বার পই পই করে বলতাম আমার নাম ’গাইজা’ নয় ‘কায়সার’। যাই হোক এখানেই আমার সাথে পরিচয় হয় তাহমিনা ভাবী, নিশা ভাবী, গ্যারি (চাইনিজ), ব্রাড, বেলিন লি (কানাডিয়ান), ডিডিয়ে ও ইয়ানিক (দুজনেই ফ্রেঞ্চ), ডগলাস (রাগবি খেলোয়ার, গিটারবাদক এবং গায়ক), ক্যারোলিন, কাভোয়া সহ আরো অনেকে। কোম্পানীর মালিক ছিলেন চার্লস ও রিচার্ড, দুইজনেই ফ্যাগ এড বা গে। উনাদের সম্বন্ধে বিশেষ কিছু উল্লেখ করার নেই। কিন্তু যার কথা না লিখলে লেখার সার্থকতাই থাকবে না, সে হল হেড শেফ ক্রেইগ যোসেফ। অসাধারণ একজন ব্যাক্তি বয়স তখন ৩৭/৩৮ হবে, আদি নিবাস সাউথ আফ্রিকা, পূর্বপুরুষ ব্রিটিশ কিন্তু সাউথ আফ্রিকান একসেন্টে কথা বলতেন। অসাধারণ এক ব্যক্তিত্ব। আমরা কেউ কোনদিন উনার আগে কাজে উপস্থিত হতে পেরেছি মনে পড়ে না। উনি ছিলেন পুরো ক্যাটারিং এর হেড শেফ আর আমার বড় ভাই মোক্তার হোসেন ছিলেন কিচেন হ্যান্ড সেকশনের হেড স্টাফ। ক্রেইগের মত ধৈর্য্যশীল ব্যক্তি আমার জীবনে আর একটাও দেখব কিনা জানিনা। উনার একটা কথা আমি আমার জীবনে সবসময় মেনে চলতে চেষ্টা করব আর সেটা হল, “আগে বুঝি নিবে তুমি তোমার কাজটা জান কিনা? যদি না জান বা না বুঝ অবশ্যই বলবে যে আমি জানিনা, কিন্তু কখনেই না জেনে কখনই কোন কাজ করবে না।” উনাকে কখনই ধৈর্য্যহারা হতে দেখিনি।
কলোনারী এজ
এম সি এ ক্যাফে
এস টি সি ক্যাফে
চার্লিস কিচেন
তখন আমি কাজ করতাম কলোনারী এজ এর MCA ক্যাফেতে। তখন কাজের চাপ কম থাকায় কাজের জন্য গেলাম অপেরা হাউজ রেস্টোরেন্ট এ। এখানে তখন কাজ করত ইউসুফপুরের আনোয়ার ভাই। উল্লেখ্য যে ইতিপূর্বে এখান থেকে আমাকে ডেকেছিল কিন্তু তখন আমি না গিয়ে অন্য এক যুবককে পাঠালাম। মনির নাম, উনার ওয়াইফ এর সাথে পরিচয় ছিল এবং তখন মনিরে কোন কাজ ছিলনা বিধায় ভাবলাম আমার তো কাজের অভাব নেই কিন্তু কাজটা আমার চাইতে মনিরের বেশি দরকার। বিধি বাম, একদিন কাজ করে মনির আর কাজে যায়নি। তার কাছে মনে হয়েছে ওখানে কাজ করলে তিনি নাকি মরে যাবেন যা পরবর্তীতে ভূল প্রমানিত করে আমি বহুদিন কাজ করেছি। ওখানে প্রধান কাজ ছিল লোডিং ডক থেকে পণ্য বুঝে নিয়ে তা কুল রুম বা ফ্রিজারে তুলে রাখা। দেখেছি ওখানে নিরাপত্তার বলয়টা বেশ শক্ত ।
অপেরা হাউজ রেস্টোরেন্ট
ক্যারিয়ার এ্যাজ এ ট্যাক্সি ড্রাইভার২০০৬ এর শেষের দিকের কথা, অনেক কাঙ্খিত ট্যাক্সি লাইসেন্স পেলাম। তার জন্য আমাদে সিডনী ট্যাক্সি স্কুলে ভর্তি হতে হল আরও ৯ মাস আগে। সাধারণত ৬ মাস সময়ের মধ্যেই মানুষ লাইসেন্স পেয়ে যায় নানান কারনে আমার লাগল প্রায় ৯ মাস। উল্লেখ্য যে, ট্যাক্সি লাইসেন্স পাওয়ার প্রধান শর্ত আপনার ড্রাইভার লাইসেন্স থাকতে হবে, মাইগ্রেশন ইংলিশ পরিক্ষায় পাশ করতে হবে এবং কোন স্বীকৃত ট্যাক্সি স্কুলে পড়তে হবে। উক্ত ট্যাক্সি স্কুল ইন্টারনাল পরিক্ষা নিবে এবং তারা যখন ওকে বলবে শুধুমাত্র তখনই আপনি ট্যাক্সি লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন, অন্যথায় সম্ভব নয়। আমাদের দেশের মত ঘুস বা দুর্নীতির কোন বালাই নেই। অনেক স্মৃতি আছে আমার এই পেশায়, ভাল মানুষ যেমন পেয়েছি তেমনি দুষ্টু লোকের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক যাত্রীর হারানো মালামাল পেয়েছি এবং ট্যাক্সি বেস এ জমা দিয়ে প্রসংশাও কুড়িয়েছি অনেক। একবারের একটা ঘটনার কথা বলি। যাত্রী নিয়ে মেইন সিটি থেকে Wooloomooloo তে গিয়েছি, ড্রপ অফ করলাম এবং ফিরে আসছিলাম। Darlinghurst পার হয়ে Redfern এর ক্রাউন স্ট্রীতে গাড়ি নিয়ে বেস এর ফিরছিলাম। এটা ছিল আমার ঐদিনের মতো শেষ ট্রিপ। হঠাৎ করে পিছনে তাকিয়ে মনে হল কিছু একটা যাত্রী মনে হয় ফেলে গেছে। গাড়ি থামালাম, দেখলাম একটা আই ফোন। ২০০৭/০৮ এর দিকে এমন একটা ফোন খুব দামী ছিল এবং এটা কেনার মত সাহস করতে পারি নাই, যদিও ইচ্ছা ছিল একটা কিনব কিছু টাকা জমিয়ে। নিজের সাথে দ্বন্ধে পড়ে গেলাম ফিরত দিব কি দিব না। সত্যি কথা বলতে কি লোভ হচ্ছিল খুব। ফোন টার সুইচ অফ করে দিলাম এবং আবার গাড়ি চালাতে লাগলাম। আমার কি হল জানিনা, এত গরম আর অস্থির লাগছিল বলার মত না। এসি ফুলস্পীডে দিয়েও ঘাম বন্ধ করতে পারছিলাম না। নিজের ভেতর অজানা একটা ভয় অনুভব করছিলাম সাথে সাথে অনুশোচনা। ৫০০ মিটারের মত যেতে পেরেছিলাম, তারপর গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে গাড়ি থেকে বের হয়ে ফোনটা চালু করলাম। শেষ ডায়াল নাম্বারে ফোন করে জানালাম যে ফোনের মালিক ফোন টা হারিয়ে ফেলেছে আমার ট্যাক্সিতে। আমাকে ওপাশ থেকে বললেন আমি যদি ফোনটা পৌছে দিই তাহলে আমাকে ভাড়া দিয়ে দিবে। যেতাম কিন্তু আমার শিফট শেষ, এবং গাড়ি জমা দিতে হবে জানিয়ে অপারেটরের কাছে জমা দিব জানালাম। ওখান থেকে যেন পরে নিয়ে নেয়। অনেক ধন্যবাদ পেলাম ওনার কাছ থেকে। পরে চিন্তা করে দেখেছি যে, আমার দ্বারা কারো কিছু মেরে দেয়া সম্ভব নয়।
-
কখনও ভাবিনি বাবাকে নিয়ে কিছু লিখব , বা লেখার কথা ভাবব কিন্তু লিখতে হচ্ছে। কারন আজ আমি বাবা মানে বুঝি , আজ তো আমিও বাবা। ...
-
Love for him After a very long time I have talked to him today on 07.07.2020. I was surprise in wonder talking to him. I felt i would cry wh...
-
(আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহের এক অধ্যায়ের কিছু স্মৃতি উল্লেখ করার প্রয়াসে আমার এই ব্লগ লেখা, সত্য প্রকাশে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে...