Thursday 1 February 2018

আমি ধীরে ধীরে বাবা হয়ে যাচ্ছি





কখনও ভাবিনি বাবাকে নিয়ে কিছু লিখব, বা লেখার কথা ভাবব কিন্তু লিখতে হচ্ছে। কারন আজ আমি বাবা মানে বুঝি, আজ তো আমিও বাবা। সন্তানকে বুকে নিয়ে যে আনন্দ তা বোধহয় আর অন্য কোন কিছুতে নেই। বাবা আর ন্তানের মধ্যে যে অত্যাবশ্যকীয় সম্পর্ক থাকার কথা তা আমার বাবার সাথে কখনও হয়নি। একটা দূরত্ব থেকেই গেছে আজীবন। আজআমার বাবা দুনিয়াতেবেঁচে নাই কিন্তু তার শূন্যতা  প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভ করছি। যখন ছোট খুব ভয় করতার বাবাকে কারন উনি ছিলেন প্রচন্ড বদরাগী। অনেক ভেবেছি কেন হয়নি, হয়ত এটা একটা কারন হতে পারে যে, আমার জন্মের ৯মাস পরের বাবা বিদেশে চাকুরীর জন্য চলে গেলেন। প্রথমবার যখন এলেন বিদেশ থেকে ছুটিতে তখন আমার বয়স আর কত? বড়জোড় সাড়ে তিন বা চার। কিছুই বুঝতে পারিনি বাবা কি বিষয়। কিন্তু যখন দ্বিতীয়বার দেশে আসলেন তখনকার কথা আমার কিছু কিছু মনে আছে। যেমন আমি খোঁচা খোঁচা দাড়ির ভদ্রলোককে অপরিচিত ভেবে পালিয়ে গিয়েছিলাম। সেবার সেজু ভাই আমার একত্রে মুসলমানি (সুন্নতে খৎনা) করা হল। বহু ধুমধাম করে আয়োজন করা হল। তখন সাত্তার স্যার আমাদের বাসায় থাকতেন। ছোটবেলায় শুধু মাত্র বাবাই নয়, বড় ভাই বা তাদের বন্ধুরা, চাচা, বা উনাদের সমবয়সী সবাইকে যমের মত ভয় পেতাম কিন্তু তাই বলে কারও গাছে আম পেকেছে, পেতি গাব গাছে গাবে রং এসেছে কিন্তু পেড়ে খাবা মত বাচ্চা নেই; এটা কল্পনাতীত ছিল আমাদের সময়। স্কুল ছুটি হলে  বই ছুড়ে ফেলতে যতটুকু সময় লাগত ততটুকুই অবসর তারপরই শুরু হয়ে গেল খেলা, চলত সেই সন্ধ্যা পর্যন্ত। তবে এমন খুব কম হয়েছে যে ন্ধ্যা মিলেয়ে গেছে কিন্তু আমাদের বাসায় ফেরা হয়নি। 




আমি প্রায়ই একটা ঘটনা আমার সহধর্মিনী  এবং আমার বড় ছেলে আফুয়ান কে বলি কলা আর বনরুটির ঘটনাটা। যাই হোক ভূমিকা বাদ দিয়ে ঘটনাটা বলি, একবার আমি যখন খুবই ছোট, বাবার সাথে ঢাকায় গিয়েছি, যদিও সেঝুকাকার বাসা কাছেই ছিল কিন্তু কি মনে করে আব্বা পাউরুটি আর কলা কিনলেন। খেলাম ফার্মভিউ পার্কে  বসে, জীবনে তারপর অনেক কলা পাউরুটি খেয়েছি, দামী বা কমদামী কিন্তু সেই স্বাদ আর কোনদিন পাইনি। মনে হয় এখনও সেই স্বাদ মুখে লেগে আছে।  





মনে পড়ে ছোট বেলায় আব্বার সাথে সবাই যখন ঢাকা আসতাম, আমাদের খুব ভোরে উঠতে হত; মা তারও আগে উঠে পথের জন্য খাবার তৈরি করতো। ভোর ৪-৫ টার মধ্যে বের হয়ে কাচারীঘাট থেকে লঞ্চে উঠতাম, ছয় থেকে সাত ঘন্টার লম্বা জার্নি শেষে ঢাকা পৌছাতাম তারপর সদরঘাট থেকে কাঠাল বাগান বা ফার্মগেট।  এই যে লম্বা জার্নি সেটা একটা আনন্দময় ভ্রমন অভিজ্ঞতা ছিল। ঝালমুড়ি বিক্রি হত লঞ্চে এবং এটা ছিল আমাদের মাষ্ট ট্রাই আইটেম। তিন টাকায় কোক পেপসি পাওয়া যেত তখন। কমলার কোয়ার মতই দেখতে একটা লজেন্স ছিল। 

                     .......... To be continued

1 comment:

আইসক্রীম